১৪ই ফেব্রুয়ারি। সারা শহর প্রেমের রঙে রঙিন। কেউ প্রিয়জনের হাতে তুলে দিচ্ছে ফুল, কেউ বা উপহার দিয়ে জানাচ্ছে মনের কথা। সোশ্যাল মিডিয়া ভালোবাসার গল্পে ভরে উঠেছে। কিন্তু এই দিনে যখন সবাই বলছে, “আমি তোমায় ভালোবাসি”, তখন একটা প্রশ্ন চুপিচুপি মাথায় ঢুকে পড়ে — এই ভালোবাসার দাবিদার কারা?
ন্যাচারালস বাই রাখি এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছিল একটু অন্যভাবে। ভালোবাসা মানে কি শুধু রোমান্টিক সম্পর্ক? নাকি এই দিনটাতে ভালোবাসার ছোঁয়া পেতে পারে তারাও, যাদের পাশে কেউ নেই?
এই ভাবনা থেকেই আমাদের প্ল্যানিং শুরু হয় অনেক আগে থেকেই। সিদ্ধান্ত নিই, এবারের ভালোবাসা দিবস কাটাবো তাদের সঙ্গে — যাদের ভালোবাসার দাবি হয়তো কেউ ভাবে না, শুনতে পায় না… বৃদ্ধ ও অনাথ আশ্রমের মানুষদের সঙ্গে।
আমাদের গন্তব্য ছিল “আমাদের বাড়ি” একটি বৃদ্ধ ও অনাথ আশ্রম।
১৪ তারিখ সকালে সেখানে পৌঁছানো মাত্রই মনে হলো, ওরাই তো আসল ভালোবাসার প্রাপ্য। সবার চোখে মুখে যে আনন্দ, যে কৃতজ্ঞতা, তা ভাষায় বোঝানো যাবে না। কেউ কেউ চোখের কোণে জল লুকানোর চেষ্টা করছিলো, আবার ছোট ছোট মুখগুলো খিলখিল করে হাসছিলো — যেন পুরো জায়গাটা ভালোবাসায় ভরে উঠেছে।
আমরা ছোটদের সঙ্গে খেলাধুলা করলাম, গল্প করলাম। দুপুরে রান্নার দায়িত্বও ছিল আমাদের। তবে মেনু নির্ধারণ করেছিলো ওরাই — পোলাও, মুরগির রোস্ট, ডাল, সালাদ আর দই। ওদের খুশির মাঝে আমাদের পরিশ্রম যেন আনন্দে বদলে গেল।
সবচেয়ে আনন্দের মুহূর্ত এলো বিকেলে, যখন আমরা ওদের হাতে তুলে দিলাম ভালোবাসা দিবসের উপহার। ছোট্ট ছোট্ট হাতে যখন গিফট প্যাক তুলে দিচ্ছিলাম, তখন তাদের চোখের ঝিলিকটাই ছিল আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় উপহার।
এই দিনটা আমাদের কাছে ছিল ভালোবাসা দিবসের আসল রূপ।
একটা দিন, যেটা প্রমাণ করলো ভালোবাসা মানে পাশে থাকা, খোঁজ রাখা, কাউকে গুরুত্ব দেওয়া। ভালোবাসা মানে হৃদয় দিয়ে অনুভব করা।
ন্যাচারালস বাই রাখি বিশ্বাস করে, ভালোবাসা হোক সবার জন্য বয়স, পরিচয়, সম্পর্ক বা অবস্থান না দেখে,শুধু মানুষ দেখে।